গ্রাম বাংলার গুপ্ত রহস্য

গ্রাম-বাংলা (নভেম্বর ২০১১)

এফ, আই , জুয়েল
  • ৩৪
  • 0
" সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালীর হে মুগ্ধ জননী ,
রেখেছ বাঙ্গালী করে , মানুষ করোনি । "
---- এই কথা শেষ হতে না হতেই জনগন আক্রোশে ফেটে পরছে । ধর শালাকে , মার শালাকে । কিন্তু কেনো ? ---- এই বেটা আমাদের বাপ-দাদা সহ ১৪ গোষ্টিকে অপমান করেছে । এর আর বাঁচার উপায় নাই । ধর শালাকে , মার শালাকে । জনগন দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে । একদল ওকে মেরে ফেলে মনের জ্বালা মেটাতে চাচ্ছে । আর একদল ওদেরকে বোঝাতে চাচ্ছে , থামাতে চাচ্ছে । কিন্তু ওরা কিছুতেই থামবে না । এরা বুঝাচ্ছে ,--- এই কথাগুলো এর নয় । কোনো এক কবি বলেছেন । বই পুস্তকে আছে । ওরা বলছে---- কবি বলুক । বই পুস্তকে থাকুক । সেটাতে আমাদের কোনো আপত্তি নাই । কিন্ত এই বেটা সেটা বলবে কেনো ? ধর শালাকে , মার শালাকে ।

আবহমান বাংলার চিরায়ত চেনা পথে , শালা একটি জাতীয় গালিতে পরিনত হয়েছে । শালার সাথে শালীও আছে । এনিয়ে গালাগালি আর রঙ-তামাশায় মাতামাতির সুযোগ থাকলেও ----, দায়িত্ব ও কর্তব্যের জায়গাটা থেকে সবাই কেন জানি ছিটকে পরছে ! শুধু ধর ধর , মার মার-- এর দিকে চলার মনোভাবটা দিন-দিন বেড়েই চলেছে । কিন্তু অবস্থাটা আগে এরকম ছিল না । দ্রুততার সাথে মানসিকতার এই পরিবর্তনের পিছনে অবশ্যই কোনো রহস্য আছে । সম্পর্কের মধুময় মায়াবী বাঁধন ছিড়ে ছিড়ে ছেড়াবেড়া হয়ে যাচ্ছে ।

গল্পটা এভাবেই চলতে পারত । কিন্তু প্রায় দুই যুগ পরে এসে রাণীমাতা সব কিছু ওলট-পালট করে দিল । কে এই রাণীমাতা ? রাণীমাতা এক রহস্যময়ী নারী । তার আছে কয়েক রকমের মারাত্মক মারাত্মক জ্ঞান । যে জ্ঞানের শক্তিতে সে সমস্ত পৃথিবীকে শাসন করার স্বপ্ন দেখে । রানীমাতা এবার বাংলা মুলুকে এসেছে--, এখানকার মানুষের দুঃখ-কষ্ট দুর করে তাদের মুখে হাসি ফুটাবার জন্য । তার সাথে আছে জ্বীন-পরীর এক শক্তিশালী বাহিনী । সর্প রানীর সাথেও রানীমাতার গভীর বন্ধুত্ব । বেহুলার স্বামী লক্ষীন্দরকে সাপে কাটার পর সাপদের জন্য মহা দুঃসময় নেমে এসেছিল । সেই সময় রাণীমাতা জ্বীনদের সহায়তায় সাপদেরকে এমন জায়গায় নিয়ে রেখেছিলেন , যেখানে বীণের বাজনা পৌঁছতে না পারে । সেই থেকে সর্প রাণীর সাথে তার মধুময় গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠে । ভরা পূর্ণিমা আর আমাবশ্যায় সাপদের গুরুত্বপূর্ন অনুষ্ঠান গুলোতে যেতে পেরে রাণীমাতার অনেক অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান লাভ হয়েছে । জ্বীন আর সাপের সাথে সম্পর্কের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রাণীমাতা অনেক অসাধ্য সাধন করেছে । জ্বীন আর সাপের গোপন পাহারায় রাণীমাতার আজব মহল এক অন্যরকম নিরাপত্তার চাঁদরে ঢাকা থাকে সবসময় । বছর বছর রুপবতী উঠানের জলসায় এরকম এক গোপন নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরী করা হয়ে থাকে । কিন্তু অনেকেই সেটা বুঝতে পারে না । ভিতরে ভিতরে যাই হোক না কেনো---, সাধারণ মানুষের কাছে রাণীমাতা খুবই জনপ্রিয় । আর এজন্য তার স্বভাব সুলভ অহংকার প্রায় প্রায় হালকা হাওয়ার ঢেউ তোলে ।

গ্রামের লোকদের মধ্যে দারুন কলহ দেখা দিয়েছে । কেউ বলছে সাপ মারা যাবে , কেউ বলছে যাবে না । এই নিয়ে বিবাদ বাড়তে লাগলো । দুই দলই বলছে--- , আমরা হাদীসের বইয়ে পেয়েছি । আমাদেরটা মানতে হবে । গ্রামের এক প্রবীন জ্ঞানী লোক বিবাদ থামাবার চেষ্টা করছে । সে বলছে ---, যে হাদীসটা পরে এসেছে সেটা মানা উচিত । না , তা হবে না । তা হবে না । জ্ঞানী লোকটি তখন তাদেরকে বুঝিয়ে বলতে লাগলো । দেখো---, মুহাম্মদ (সাঃ) এক সময় সাপসহ ক্ষতিকর পোকা-মাকড় মারতে নির্দেশ দিয়েছিলেন । কিন্তু যখন জ্বীন জাতীর কতিপয় সদস্য তার কাছে ঈমান এনে যাতায়াত করতে লাগলো----, তখন তারা বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে সাপের রুপ ধরে আসত । এজন্য পরে তিনি-- , যাচাই না করে সাপ মারতে নিষেধ করেছিলেন । তার কথা সবাই মেনে নিল । এই জ্বীনদের মধ্যে একজনের নাম হলো - ' হামা ' । এ হলো ইবলীস শয়তানের প্রোপৌত্র বা নাতীর ছেলে । এর বয়স প্রায় পৃথিবীর বয়সের সমান । পৃথিবীর প্রথম হত্যাকান্ড বা হাবিল-কাবিলের দ্বন্দ্বের ঘটনায় অন্যান্যের সাথে হামাও জড়িত ছিল । তখন সে কৌশোরে উপনীত । [=১*] ভাবলাম--, হামা জ্বীনের সাথে সম্পর্ক সৃষ্টি করতে পারলে রাণীমাতাকে বেশী বেশী করে Love you বলা সহজ হবে । তখন আর তার জ্বীন গুলিকে দিয়ে বেশী বাহাদুরী দেখাতে পারবে না ।

এখন হামা জ্বীনের খোঁজ-খবর নিয়ে সাধনা শুরু করা দরকার । কি আর সাধনা করব ? এদিকে ঘটেছে অন্য ঘটনা । লীলাবতীকে সাপে কেঁটেছে । মিথ্যা মহলে তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে । কারন--, লীলাবতী গোমরাজ গ্রুপের সদস্য । যারা বয়সে তরুন । সাধনা কখনো করে , কখনো বাদ দেয় । ভীষন প্রতিবাদী ও জেদী । এইভাবে সাধনা করতে পারব না । ঐ ভাবে করব । এটা ভালো না । এই ভাবে করলে কি লাভ ? এখনো কেনো সুফল পাচ্ছি না ? -- এরকম যত কথা-- , সব মুখের উপর বলে দেয় । এরা গুরুকেও তেমন মানতে চায় না । যেটাকে সত্য ও ন্যায় মনে করে সেটাকেই কিছু সময়ের জন্য ধ্যান-জ্ঞান করে নেয় । আদব সহ বেয়াদব এই গ্রুপটাই গোমরাজ গ্রুপ নামে পরিচিত । এদের কার্যকলাপ ও কথাবার্তা যতই বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি করুক না কেন---, মিথ্যা মহলে এদের একটা আলাদা গুরুত্ব আছে । কারন এদের শ্রম ও কর্ম-তৎপরতা ছাড়া---, বছর বছর বড় বড় সাধনার শৈল্পিক মেলা গুলো পরিচালনা করা কঠিন হয়ে যাবে ।

অপরুপ সুন্দরী , বুদ্ধিমতী , উচ্চ-ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন ও স্বাধীনচেতা মনোভাবের কারনে মিথ্যা মহলে লীলাবতীর জনপ্রিয়তা অনেক বেশী । সবাই তাকে খুব ভালবাসে । কিন্তু কেউ Love you বলার সাহস পায় না ।

মিথ্যা মহলের ভিতরের উঠানে ভেলা সাজিয়ে লীলাবতীকে শুইয়ে রাখা হয়েছে । সব চেষ্টা ব্যর্থ হলে শেষ চেষ্টা হিসাবে ভেলাসহ তাকে নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হবে । বীষের তীব্র ছোঁয়ায় লীলাবতীর শরীর নীল হয়ে গেছে । তবুও তার ঠোটে লেগে আছে হাসির ঝিলিক । ডাক্তার অনেক আগেই মৃতঃ ঘোষনা করেছে । এখন ওঝা , সাপুরে ও কবিরাজ দিয়ে চেষ্টা-তদবীর চলছে । কোনো কাজ হচ্ছে না । শীলা দেবীকে শান্তনা দেবার ভাষা আমার নাই । তবুও আমার উপস্থিতিই তার জন্য বড় শান্তনা । শীলাদেবী হলো লীলাবতীর বড় বোন । মিথ্যা মহলের এক সাধু কন্যা ।

অনেক দিন আগের কিছু কিছু শুনা কথা নুতুন ভাবে মনে পরতে লাগল । নবী মুহাম্মদ (সাঃ)- তার সাথী আবু বকর (রাঃ)- সহ সওর পর্বতে যখন লুকিয়ে ছিলেন---, তখন আবু বকরকে এক বিষাক্ত সাপ ছোবল মেরেছিল । তিনি আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছিলেন । নবী নিজের মুখের থুথু দংশিত স্থানে লাগিয়ে দিলে আবু বকর ধীরে ধীরে সুস্থ্য হয়ে উঠলেন । তিনি থুথুর প্রলেপ দেয়ার সময় কোনো দোয়া পড়েছিলেন কি'না----- সে সর্ম্পকে তেমন কিছু জানা যায় নাই ।
আর একটি ঘটনা অনেকটা এরকম----, । কিছু সাহাবী বাণিজ্য কাফেলা নিয়ে সফরে গেছে । রাত্রে তাবু খাটিয়ে বিশ্রাম করছে । অন্য গোত্রের এক ব্যক্তিকে সাপে কেটেছে । স্থানীয় সব চিকিৎসা শেষ । তাদের প্রবীন এক ব্যক্তি বলল --, ঐ কাফেলার লোকজনকে সৎ-সাধু বলে মনে হয় । ওরা নাকি মুহাম্মদ নবীর অনুসারী । চলো তাদেরকে বলি । ওরা যদি কিছু করতে পারে ! কাফেলার সর্দারের এ সর্ম্পকে তেমন কোনো জানা ছিল না । তবে ছুরা ফাতেহার মাহাত্ম্য সর্ম্পকে তার কিছুটা জানা ছিল । সে ছুরা ফাতিহা পড়ে ফু দিয়ে দংশিত স্থান পানি দিয়ে ধুয়ে দিল । ধীরে ধীরে রোগী ভালো হয়ে গেল । রোগীর পক্ষের লোকজন উপহার হিসাবে সর্দারকে কিছু ছাগল দিতে চাইলেন । কিন্তু সর্দার দ্বিধায় পরে গেল । ছুরা পড়ার বিনিময়ে এটা নেয়া ঠিক হবে কি'না ? পরে নবী মুহাম্মদকে বললে--, তিনি এর একটা সুন্দর উপায় বলে দিয়েছিলেন ।
আমার মনে হলো---, আমিও ছুরা ফাতিহা পড়ে থুথু লাগিয়ে দেই । কিন্তু কাজ না হলে ধরা খেতে হবে । এতদিনের সব ভাল নিমিষেই শেষ হয়ে ভন্ডের খাতায় নাম লেখাতে হবে । আমি কৌশলে গুরুরাজ আজরাহাকে বললাম---, এই ভাবে কিছু করা যায় কি'না । আপনি যদি কাউকে দিয়ে একটু চেষ্টা করাতেন !
গুরুরাজ আমাকে থামিয়ে দিলেন । তিনি তার গুরু মহামতি আজবেলার সাথে পরামর্শের ইঙ্গিত দিলেন । গুরুরও গুরু আছে । আমি অবাক হলাম । এই প্রথম মিথ্যা মহল আমার কাছে একটা রহস্যপুরী বলে মনে হতে লাগল ।

ভাবনার ঘোর কাটতে না কাটতেই শীলাদেবী আমাকে নিয়ে গেল আজবেলার অন্তঃপুরে । গুরুরাজ আজরাহার আস্তানা পেরিয়ে মিথ্যা মহলের অনেক ভিতরে খুবই সুরক্ষিত ও নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা গুরুমাতা আজবেলার খাস কামড়া অবস্থিত । এটা বেশীর ভাগ সাধকের কাছে রং মহল নামে পরিচিত । এখানে সহজে কারো প্রবেশের অনুমতি নাই । শুধু বিশেষ বিশেষ দিনে , বিশেষ সাধকদেরকে এখানে ডেকে গুরুত্বপূর্ন নির্দেশনা দেয়া হয় । গুরুরাজ আজরাহার মত সাধক পুরুষও এখানে অনেকটা শিশুর মত অসহায় বোধ করে । কারন এখানকার ব্যপারটাই আলাদা । এখানে স্রষ্টার কর্ম, গুনাবলী এবং তার ইচ্ছা ও সন্তষ্টির সাথে মিল রেখে এখন আমাদের কি করা উচিত ? -- এ সর্ম্পকে ভাব আর ভাষার দোলায় জ্ঞানের আদান-প্রদান চলতে থাকে । এর সাথে চলতে থাকে গুরুমাতার উচ্চ পর্যায়ের সবক । এটা এত উচু মানের সাধনার পর্যায় যে ---, বুদ্ধি অবশ হয়ে আসে । আত্মা ধরপর করতে থাকে ।

গুরুমাতার সাধনার পথের একটা কমান্ডো সাধক দল বসে আছে । কখনো হালকা পায়চারীর মত আবার কখনো বসে বসে গুরুমাতা একের পর এক ঘটনার বর্ননা এবং সাথে সাথে করনীয় সর্ম্পকে নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে । সকল ইন্দ্রিয় সজাগ করে সবাই চুপচাপ বসে আছে ।

গুরুমাতা বলেই চলেছে---, " গ্যালাক্সী অনেক বড় । এর গতি ও বিশালতা কল্পনা করতে অনেক বেগ পেতে হয় । সাধকদের জন্য এ জাতীয় ধারনা রপ্ত করার গুরুত্ব অনেক । আমরা যে গ্যালাক্সীতে বাস করি এর নাম--" মিল্কিওয়ে বা আকাশ গঙ্গা " । আমাদের প্রতিবেশী নিকটতম গ্যালাক্সীর নাম " এন্ড্রোমিডা " । এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ত্রিশ হাজার আলোক বর্ষ দুরে রয়েছে । সেখানে মানুষের মত জ্ঞানী জীবের উপস্থিতি আন্দাজ করতে পেরে নাসার বিজ্ঞানীরা তাদের উদ্দেশ্যে একটি চিঠি পাঠিয়েছে । যার নাম--- , ইলেকট্রনিক্স লেটার বা তরঙ্গায়িত পত্র । চিঠিটা শুধু যাচ্ছে আর যাচ্ছেই---, । এখনো যাওয়া শেষ করে নাই । [= ২*]

কিন্তু ঘটনা হলো----, এন্ড্রোমিডা থেকে একটা অশুভ শক্তি পৃথিবীতে চলে এসেছে । এদেরই একটা অংশ এই বাংলা মুলুকে অরাজকতা ও অশান্তি সৃষ্টি করে চলেছে । এরা সততা , সম্পদ ও জ্ঞান বিভিন্ন কৌশলে ছিনতাই করে নিয়ে যাচ্ছে । আর মিথ্যা-প্রতারনা কে স্থায়ী রুপ দেয়ার জন্য উঠে পরে লেগেছে । সত্য ও সততার শক্তির কমতি থাকার কারনে এদের মোকাবেলায় বাঙ্গালী তেমন সুবিধা করতে পারছে না । বরং উল্টো ওরাই বাঙ্গালীকে হুজুগে মাতিয়ে দিয়ে তামাশা দেখছে । জনগনের জটলা , ঐক্য ও অস্ত্র দিয়ে এদের মোকাবেলা করা সম্ভব নয় । লক্ষ-কোটি বছর ধরে শুদ্ধ সাধনার ঝান্ডা বহন করে আসছে যারা----, এটা তাদের পক্ষেই সম্ভব । এই অশুভ শক্তিকে হটিয়ে দিতে হলে শক্তিশালী বিশুদ্ধ আত্মার প্রয়োজন । উন্নত আত্মাগুলো প্রকৃতি থেকে বেশী বেশী সুফল নেয়ার ক্ষমতা রাখে ।
লীলাবতীকে সাপের মত যেটা দংশন করেছে---, সেটা এন্ড্রোমিডা থেকে আসা এক অশুভ শক্তির কারসাজি । এটা বুঝতে আমাদের অনেক সময় লেগেছে । এই শক্তিকে তাড়িয়ে দিতে পারলে লীলাবতী এমনিতেই ভাল হয়ে যাবে । আর বাংলার মানুষও অনেক আপদ-বিপদ-বালা-মুছিবত থেকে রেহাই পাবে । তোমরা এই অশুভ শক্তিকে তাড়িয়ে দেয়ার জন্য সত্য ও জ্ঞান সহ এগিয়ে যাও । কিন্তু সাবধান , আঁতাত করো না ।---- এই সকল কথা বলে গুরুমাতা আমাদেরকে বিদায় দিয়ে দিলেন ।

শীলাদেবীর নেতৃত্বে আমরা রওনা দিলাম । গ্রামের পর গ্রাম হেটে হেটে চলতে লাগলাম । বন-নদী-পাহাড়-সৈকত আর সবুজের ঢেউ তোলা বিস্তৃর্ন ফসলের মাঠ সহ প্রকৃতির অপরুপ রুপের বাহার দেখে দেখে মুগ্ধ হলাম । কিন্তু মানুষে মানুষে এত ভেদাভেদ আর শত্রুতা কেন ? ঘরে ঘরে দুঃখ-কষ্ট আর অশান্তির দমকা হাওয়া দেখে অবাক হলাম ।
আবহমান বাংলার ঐতিহ্যের সেই গোলাভরা ধান , গোয়াল ভরা গরু আর পুকুর ভরা মাছ---- আজ এগুলির অস্তিত্ব কোথায় ? হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সোনার বাংলা এত দ্রুত শ্মশান বাংলায় বদলে গেল কিভাবে ?--- এই রহস্যের জট কে খুলবে ?

একদিকে লীলাবতীকে বাঁচাবার প্রশ্ন । আর একদিকে বাংলা বাসীকে অশুভ শক্তির হাত হতে বাঁচাবার চেষ্টা---- এই দুই কারনে শীলাদেবী অনেক কঠিন হয়ে গেছে । সে এগিয়ে চলছে । আমরা তাকে অনুসরন করছি । শীলাদেবীর কোনো উপায় নাই । বোনকে বাঁচাতে হবে । প্রয়োজনে মৃত্যুর মুখোমুখি দাড়িয়ে অট্রহাসি হাসতে হবে ।
বন-পাহাড়-নদী-নালা তছনছ করে অশুভ শক্তিকে ধাওয়া করে চলেছি । তারা এখন পালাচ্ছে । উপরের দিকে উড়াল দিয়েছে । শীলাদেবী আকাশ আর বাতাসের দেবতাকে কি যেন বলল । তারপর আমরাও উড়াল দিলাম । ধর শালাকে , মার শালাকে । কিন্তু শালারা পালাতে লাগল । পালাতে পালাতে সৌর-জগতের সীমানা পার হয়ে গেল । আমরাও ছুটছি । পরম প্রেমের চরম চুমুক দিতে ব্লাকহোল গুলো হরেক রকম ইশারায় ডাকছে । না , কারো সাথে মিতালী করা যাবে না । একটাই কাজ । অশুভ শক্তিকে হটিয়ে দিতে হবে । এভাবে চলতে চলতে আমরা আমাদের গ্যালাক্সী মিল্কিওয়ের কিনারে চলে গেছি । আর ওরা পালিয়ে এন্ড্রোমিডার কাছাকাছি চলে গেছে ।
এবার শীলাদেবী থামল । পৃথিবীর দিকে তাকালাম । কিছু দেখার , বোঝার উপায় নাই । শীলাদেবী আলোর দেবতাকে ধমকের সুরে কি যেন বলল । বাংলা মুলুককে এবার স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে । নদীতে জল নেই । ক্ষেতে ফসল নেই । মানুষে মানুষে মারামারি আর কাটাকাটি । চারিদিকে হাহাকার ।

আমরা পৃথিবীর দিকে নেমে আসতে লাগলাম । সূর্য দেবতা লাল গালিচা সংবর্ধনা দিতে চাইলো । আমরা নিলাম না । শীলাদেবী মেঘরাজকে এবছর বেশী করে বৃষ্টি দেয়ার কথা বলে দিল । আমরা পৃথিবীর বায়ু মন্ডলের মধ্যে চলে এসেছি । বাংলা মায়ের দিকে আমাদের কাফেলা ছুটে চলেছে ।
বাংলার জনগন আমাদেরকে দেখতে পেয়ে উল্লাস শুরু করে দিয়েছে । তাদের চারিদিকে সবুজের বিশাল সমারোহ । যেন সবুজের এক ঘন গালিচা । উপরে পল্লি বধুর কপালের লাল টুক টুক টিপের মত উজ্জ্বল সূর্য । লালে আর সবুজে সে কি অপরুপ মিতালী ! চারিদিকে গগন বিদারী একটাই আওয়াজ--- " জয় বাং--লা " । --এই জয় বাংলার পথ ধরে সত্য-সুন্দর ও পবিত্রতার ভিত্তির উপর নোতুন সভ্যতা বিনির্মানের প্রতিশ্রুতির শপথ--, সকল প্রানে প্রানে দোল খেতে লাগলো ।

জনতার প্রশংসা আর ধন্যবাদের জোয়াড়কে ইনিয়ে-বিনিয়ে এড়িয়ে আমরা মিথ্যা মহলে চলে এলাম । এইমাত্র ধ্যান ভেঙ্গে গুরুমাতা আজবেলা বাইরে বেরিয়ে এলেন । তার সাথে লীলাবতীকে অপরুপ সুন্দর দেখাচ্ছে । মনে হচ্ছে যেন স্বর্গের দেবী । তিনি শীলাদেবীর কাছ থেকে সাধনার ঝান্ডা নিয়ে নোতুন প্রজন্মের অহংকার লীলাবতীর হাতে তুলে দিলেন । সত্য-জ্ঞান আর ধ্যানের পরশ মাখা সেই পতাকা পতপত করে উড়তে লাগল । নোতুনের জয়গানে আবার সবার মুখে----- " জয় বাংলা " ।।


[ = ১* -- এই তথ্য মাসিক মদীনা / জ্বীন জাতীর বিস্ময়কর ইতিহাস / হাদিসের বইয়ে আছে //
= ২* --- এটা সত্য । নাসার বিজ্ঞানীরা প্রায় ১০/১২ বছর আগে এই চিঠিটা পাঠিয়েছে // ]
# [ = গত সংখ্যার গল্পটা পড়া থাকলে এই লেখাটা বুঝা অনেক সহজ হবে । ]
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মনির খলজি তোমার গল্পের মর্ম উধ্হার করা ভীষণ কঠিন !! তবে তোমার গল্পের গতানুগতিক কিছু কিছু চরিত্র আমার বেশ ভালো লাগে ....আগের গল্পের সাথে লিঙ্ক থাকার কারণে গল্পটা বুঝা কিছুটা সহজ হলো.....একটা ভিন্ন স্বাদের গ্রাম-বাংলার রূপ রহস্য ফুটে উঠেছে ,,,,শুভো কামনা রইল !
শাহ্‌নাজ আক্তার ভিন্ন ধরনের সাধ খুঁজে পেলাম........একই সাথে অনেক মেসেজ............
Tahasin Chowdhury বেশ স্ন্দুর গল্প
মৌমিতা ইসলাম " সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালীর হে মুগ্ধ জননী , রেখেছ বাঙ্গালী করে , মানুষ করোনি । খুবই ভালো লাগলো।
ওয়াছিম বেশ কঠিন সুন্দর গল্প........ কি বুঝলাম আর কি বুঝলাম না তাই বুঝলাম না,,,,,,,,,,,,,,,,
সেলিনা ইসলাম বেশ ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার গল্প , শুভকামনা
আশা আগের গল্পের সাথে মিলিয়ে গল্পটি ভালোই লাগল। আপনার লেখনিতে আধ্যাতিকতা, রূপকথা, রূপকতা, ধর্মীয় বিষয় আবার বৈজ্ঞানিক তথ্যসমুহ সবই দেখছি স্থান পায়।
খোরশেদুল আলম অনেক বৈজ্ঞানিক বিষয় আর ঘটনার সংমিশ্রন সাথে গ্রামবাংলা আর হাদিসের কথা। ইবলীস শয়তানের প্রোপৌত্র বা নাতীর ছেলে। শয়তানছাড়া ও এন্ড্রোমিডা থেকে এসেছে অসুভ শক্তি। আমার মাথায় অনেক প্রশ্নের জট লেগে গেছে।

১৩ ফেব্রুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৬২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪